বাংলাদেশের চা বাগানগুলো বর্তমানে এক গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। খরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নানা ধরণের সমস্যার কারণে চা উৎপাদন অনেকটাই ব্যাহত হয়েছে। চলতি বছরে দেশের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ কোটি ৩০ লাখ কেজি নির্ধারণ করা হলেও, চা বাগানগুলোর এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
চা বাগানগুলোর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, এ বছর ৮টি চা কারখানা চালু করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে চা উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা দেশের চা শিল্পের জন্য বড় একটি ধাক্কা হতে পারে। উৎপাদন কম হওয়ার কারণে চা বাগানগুলোর আয়ও যথেষ্ট পরিমাণে কমে গেছে, যা শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি বড় সমস্যা সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেছেন, চা বাগানগুলোর জন্য একাধিক কার্যকরী পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে খরার প্রভাব কমানোর জন্য ছায়াবৃক্ষ রোপণ, গাছ প্রুনিংয়ের পর ভালোভাবে ছাঁটাই এবং প্রাচীন পদ্ধতি অনুযায়ী কচুরিপানা ব্যবহার করার কথা বলেছেন। এসব পদ্ধতি চা বাগানগুলোর পরিবেশগত চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
চা বাগান মালিকরা এবং শ্রমিকরা বর্তমানে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যদি এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তবে দেশের চা শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে। তবে, এ ব্যাপারে চা বোর্ড এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের কথা ভাবছে।
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের মধ্যে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, এর জন্য চা বাগানগুলোর অবস্থা দ্রুত উন্নত করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, চা বাগানগুলোর উন্নয়নের জন্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে দেশের চা শিল্পের টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করা যায়।
এ অবস্থায় চা বাগান মালিকরা সরকারের সহায়তা ও উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।