জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেফতার হওয়া সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, কারাগারের জীবন এখন তার জন্য অভ্যস্ত হয়ে গেছে এবং মানসিকভাবে শক্ত। বুধবার ঢাকার আদালতে হাজির হওয়ার সময় পলক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেছেন, “আগে মন খারাপ হতো, এখন আর হয় না। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনে লড়াই করার ইচ্ছা রাখছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর বনানী থানাধীন মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে অনুষ্ঠিত শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন মো. শাহজাহান নামে এক ব্যক্তি। এই সময় মিছিলে হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ গুলি চালানো হয়। ফলশ্রুতিতে শাহজাহান বুকে ও পেটে দুটি গুলিবিদ্ধ হন এবং চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ঘটনার চারপাশে আরো বহু মানুষ আহত হন।
মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে। পুলিশ আবেদন করলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।
শুক্রবার সকালে পুলিশ তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট এবং বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে এজলাসে আনা হয়। এজলাসে ওঠার সময় পলক সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “সব কিছুরই শেষ আছে। আমি মানসিকভাবে শক্ত, নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।”
পলকের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, পলক শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো আছেন এবং তিনি পরিবারের কাছে এই সংবাদ পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমকে অনুরোধ করেছেন। তবে, জেলখানায় প্রয়োজনীয় সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন। পলক জানান, কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন, যা তাকে কিছুটা ভীত করেছে। তবুও তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে সকল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, হত্যা মামলা তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আদালত শেষে তাদের আবারও হাজতখানায় নেওয়া হয়। মামলার শোনা অনুযায়ী, অভিযুক্তরা নিহত শাহজাহানের হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।


