বাংলাদেশে বৈষম্যহীন একটি ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে আসছে ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রকাশিত হবে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এটি প্রকাশ করবে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিকেল ৩টায় লাখো ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে ঘোষণাপত্রটি প্রকাশিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, “মুজিববাদী ৭২’র সংবিধানের সমাপ্তি ঘটিয়ে নতুন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকেই এই ঘোষণাপত্র তৈরি হয়েছে। এটি দেশের তরুণ প্রজন্মের গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।”
গত জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা ছাড়ে। ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়। নতুন সরকারের ১৪৫ দিন পূর্তিতে প্রকাশিত হচ্ছে এই ঘোষণাপত্র।
সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে মুজিববাদী সংবিধানের পরিবর্তে একটি নতুন সংবিধান গঠনের প্রস্তাব রাখা হবে। এটি ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যের দলিল হয়ে থাকবে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার শাসনাধীন সব প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন থাকবে।
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের খসড়া ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মত ও শ্রেণির প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে এটি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, “এটি বৈধতা অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২ হাজার শহিদের আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি এবং নতুন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, “ঘোষণাপত্রে নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং লক্ষ্য লিপিবদ্ধ থাকবে। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য নয়, বরং এটি হবে বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ গঠনের ঐক্যবদ্ধ আহ্বান।” এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন এবং দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র গঠনের দাবি তোলা হবে। এটি মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতিকে পুনরুদ্ধার করবে এবং একটি সমতাপূর্ণ বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করবে।