বিশ্ব গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে ১৬ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৪৯তম। আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংগঠন ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’ (আরএসএফ) শুক্রবার ২০২৫ সালের এই সূচক প্রকাশ করে। যদিও ভারত ও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়, তবুও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিস্থিতি ‘বেশ গুরুতর’ রয়ে গেছে বলে সংস্থাটি মন্তব্য করেছে।
এবারের সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৩৩.৭১, যা ২০২৪ সালে ছিল ১৬৫তম অবস্থানে। আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে, বাংলাদেশ ছিল ১৬৩তম স্থানে। ২০১৮ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সূচকের ১৫০-এর মধ্যে প্রবেশ করল, যা কিছুটা অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। তবে সামগ্রিকভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশের অবনতির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে আরএসএফ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে নেপাল (৯০তম), মালদ্বীপ (১০৪তম) ও শ্রীলঙ্কা (১৩৯তম) বাংলাদেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে ভারত (১৫১তম), ভুটান (১৫২তম) ও পাকিস্তান (১৫৮তম) বাংলাদেশের চেয়ে পেছনে রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী ১৮০টি দেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি পর্যালোচনার মাধ্যমে তৈরি করা হয় এই সূচক। পাঁচটি মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে এটি নির্ধারিত হয়—রাজনৈতিক প্রসঙ্গ, আইনি কাঠামো, অর্থনৈতিক অবস্থা, সামাজিক প্রভাব ও নিরাপত্তা।আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকট সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাংবাদিকরা ক্রমবর্ধমানভাবে রাজনৈতিক চাপ, ডিজিটাল নজরদারি এবং সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন।
বাংলাদেশের প্রসঙ্গে সংস্থাটি উল্লেখ করে, সাংবাদিকদের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ, স্বতন্ত্র মত প্রকাশে বাধা এবং অনলাইন মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালা স্বাধীনতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাম্প্রতিক কালে তার পরবর্তী সংস্করণগুলোর ফলে সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের সূচকে উন্নতি হলেও মৌলিক সমস্যা দূর না হলে টেকসই অগ্রগতি সম্ভব নয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে মুক্ত মত প্রকাশের পরিবেশ তৈরি ও আইনগত সংস্কার জরুরি হয়ে উঠেছে।