সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ শাটডাউন ঘোষণা করেছেন। একইসঙ্গে, বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টায় কলেজের মূল ফটকের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান মুক্তার জানান, সকাল ১০টা থেকে কলেজের সব ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি, সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমতলী, মহাখালী ও গুলশান লিংক রোডে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এক বিবৃতিতে জানান, তিতুমীর কলেজকে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করার কোনো সুযোগ নেই। তার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আরও কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এত সংখ্যক শিক্ষার্থী ও উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা জরুরি। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে তাদের দাবিগুলো মানতে হবে, নতুবা আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন—
1. সরকারি তিতুমীর কলেজকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে।
2. শিক্ষা উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
3. আইন উপদেষ্টাকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে রবিবার প্রায় দুই ঘণ্টার অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দেন। কিন্তু তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে নতুন কর্মসূচির আওতায় দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধ চলবে। কলেজ শাটডাউন ঘোষণার ফলে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে পূজার কার্যক্রম চলমান থাকবে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এবার কোনোভাবেই আন্দোলন শিথিল করা হবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ কলেজে প্রবেশ করতে পারবে না বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, সরকার কীভাবে শিক্ষার্থীদের দাবি মোকাবিলা করে এবং আলোচনার মাধ্যমে কী সিদ্ধান্ত নেয়।