জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দুর্দশার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজারে পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এরপর দুপুর ২টা ১২ মিনিটে উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব। সেখানে তিনি একটি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। শিশুরা তাকে তাদের পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানায়। এরপর তিনি রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতিকেন্দ্র পরিদর্শন করেন, যেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শনী ছিল। সেখানেই তিনি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন এবং জাতিসংঘের সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বাস দেন।
এক রোহিঙ্গা নেতা জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানান, ক্যাম্পে জীবনযাপন ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। খাদ্য সংকট, কর্মসংস্থানহীনতা ও নিরাপত্তার অভাবে তারা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। গুতেরেস তাদের আশ্বস্ত করেন যে জাতিসংঘ তাদের পাশে রয়েছে এবং টেকসই সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। প্রকল্পটির কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তথ্য নেন এবং বাস্তুচ্যুত মানুষের পুনর্বাসনের জন্য এটি কতটা কার্যকর হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করেন।
এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালে জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। পরে তিনি বিয়াম ফাউন্ডেশনে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, এনজিও প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এ সফর রোহিঙ্গাদের জন্য কতটা আশার আলো বয়ে আনবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।