ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় হামলা ও হত্যার অভিযোগে ঘটনার ১৩ মাস পর আদালতে মামলা করার আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করেন সোনাগাজীর পূর্ব সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দা এনায়েত উল্যাহ।
মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য—লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও নিজাম উদ্দিন হাজারী, সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজিসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৫০-১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর সঙ্গে স্থানীয় তিন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে—শফি উল্লাহ রিপন (দৈনিক দেশ রূপান্তর ও ইউএনবি প্রতিনিধি), শাখাওয়াত হোসেন ডন চৌধুরী (দৈনিক ফেনী), এবং সাহেদ সাব্বির (দৈনিক ফেনী)।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপালে আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে নয়জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হন। আহত হওয়ার কারণে চিকিৎসা ও আর্থিক সমস্যায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে, মামলায় সাংবাদিকদের জড়ানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেনীর কর্মরত সাংবাদিকরা। বুধবার রাতেই ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জরুরি সভায় তারা বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে সাংবাদিকদের টার্গেট করা হচ্ছে। এটিকে তারা “সাংবাদিকের কণ্ঠরোধের ষড়যন্ত্র” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আসামি সাংবাদিক শফি উল্লাহ রিপন জানান, স্থানীয় কিছু দুর্নীতি ও অপরাধ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের কারণে তারা প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তিনি নিজেও আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম বলেন, এ ধরনের মামলা গণআন্দোলনের প্রকৃত চিত্র আড়াল ও আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা। তার মতে, “বিচারের নামে অবিচার শুরু হয়েছে।”


