আগামী ১ জানুয়ারি থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ্যবই বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হলেও, বই সংকটের কারণে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না। চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার মোট ৪০ কোটি ১৬ লাখ বইয়ের মধ্যে মাত্র ৬ কোটির কিছু বেশি বই ছাপতে পেরেছে। ফলে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই পাবে কি না, সে বিষয়ে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।
পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শ্রেণির প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ৭০ লটের বই ছাপা শেষ হয়েছে এবং তা উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে, পুনঃটেন্ডার প্রক্রিয়ার কারণে বাকি ২৭ লটের বই এখনও ছাপা হয়নি। এ তিন শ্রেণির বাকি বইগুলো জানুয়ারি মাসের পুরোটা সময় নিয়ে বিতরণ করা হতে পারে। এর মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইয়ের ছাপানোর কাজও ধীরগতিতে চলছে, ফলে এসব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ বই জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পাওয়া যাবে।
মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির প্রায় দেড় কোটির বই ছাপানো হয়েছে, তবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় কিছু বইয়ের বিতরণ সীমিত আকারে চলছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী দুটি থেকে তিনটি বই পাবে, তবে নবম ও অষ্টম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানুয়ারির শেষের দিকে বই পেতে পারে। এসব শ্রেণির জন্য পুরো জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
এদিকে, এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী জানিয়ে দিয়েছেন যে, এ বছরের বইয়ের পাণ্ডুলিপি নতুন করে প্রস্তুত করতে হয়েছে, বিশেষ করে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নতুন গল্প এবং গ্রাফিতি বইয়ে সংযোজন করা হয়েছে, যার কারণে ছাপানো কাজে দেরি হয়েছে। তিনি আরও জানান, বইয়ের সংখ্যা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় সোয়া ৪০ কোটি, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বিশাল।
তবে, পাঠ্যবই বিতরণ নিয়ে সরকারের অব্যাহত চেষ্টার মধ্যেও বই সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে, যা শিক্ষার প্রথম দিনে প্রভাব ফেলতে পারে। এনসিটিবি পুরো জানুয়ারি মাস জুড়ে বইয়ের ছাপানোর কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।