গাজীপুরের সারাব এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের আরও চারটি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার মাইকিং ও নোটিশ টাঙিয়ে কারখানাগুলো বন্ধ এবং শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়। বন্ধ হওয়া কারখানাগুলো হলো—ইয়ার্ন ইউনিট-২, টেক্সটাইল, ডেনিম ও নিটিং। তবে রূপগঞ্জে অবস্থিত ইয়ার্ন ইউনিট-১ এর কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে বুধবার সকালে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, ১৫ ডিসেম্বর থেকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন চারটি কারখানা যুক্ত হওয়ায় এখন মোট ২০টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানায় কর্মরত প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। কারখানা বন্ধ থাকলেও শ্রম আইন অনুযায়ী ডিসেম্বর ও জানুয়ারির বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। তবে শ্রমিকদের আশঙ্কা, দীর্ঘমেয়াদে এই লে-অফ স্থায়ী হয়ে গেলে তারা বেকার হয়ে পড়বেন।শ্রমিকদের অনেকে জানান, হঠাৎ করে লে-অফের ঘোষণা আসায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এক শ্রমিক বলেন, “আমরা কয়েক মাস ধরে কাজ কম ছিল বুঝতে পারছিলাম, কিন্তু এত বড় সিদ্ধান্ত আসবে, সেটা ধারণা করিনি। এখন সংসার চালাবো কীভাবে?”
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ব্যবস্থাপনা কমিটির দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমান অর্থনৈতিক ও শিল্প পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পরামর্শ কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পর্যাপ্ত কাজ না থাকায় কারখানাগুলো লে-অফ করা হয়েছে। নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে লে-অফ কার্যকর হবে এবং লে-অফকৃত শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী মজুরি প্রদান করা হবে। তবে লে-অফ চলাকালে তাদের কারখানায় উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানিয়েছেন, লে-অফের ঘোষণার পর থেকে কারখানাগুলোতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের মধ্যে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আমরা সতর্ক আছি।”
এতগুলো কারখানা বন্ধের ফলে শ্রমিকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতের সংকট মোকাবিলায় নীতি-নির্ধারকদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।