রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারের পর ২৫-৩০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে মূল সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যেখানে তিনজনকে আটকের পর মারধর করা হয়। পরে তাদের মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটকদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সদস্য লাবণী (৩৫), সিরাজুল (৪৫) ও রাজু (৩০)। পুলিশ জানিয়েছে, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই মিছিলটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনে আয়োজন করা হয়। মিছিলকারীরা নানা স্লোগান দেন এবং ‘শেখ হাসিনা ফিরে আসবে’ বলে শপথ নেন।
মিছিলের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ‘নাহিদ উজ জামান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলকারীরা স্লোগান দিতে দিতে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিছিলটি যখন ধানমন্ডি এলাকায় প্রবেশ করে, তখন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা এ নিয়ে আপত্তি জানান। তাদের দাবি, রাজনৈতিক মিছিলের কারণে এলাকার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছিল। প্রথমে তর্কাতর্কি হলেও পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা মিছিলে অংশ নেওয়া তিনজনকে ধরে ফেলেন এবং তাদের মারধর করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক তিনজনকে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এডিসি জুয়েল রানা বলেন, “আমরা তিনজনকে আটক করেছি এবং তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি যে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, মিছিলের অনুমতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয়দের হামলার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। অন্যদিকে, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমর্থন জানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। এই ঘটনার পর থেকে ধানমন্ডি এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।