দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ বুধবার ঢাকা সফরে এসেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ইসরাত জাহান।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করছেন পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন। এই বৈঠককে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসানে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। এটা আমাদের নিজস্ব কূটনৈতিক স্বার্থে করা হচ্ছে। চার দশকের বেশি সময় পর আবারও সচিব পর্যায়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে, যা ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের এই উদ্যোগ অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়, বরং আমরা চাই পারস্পরিক স্বার্থে শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে।”
এই বৈঠকটি এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার চলতি মাসেই বাংলাদেশ সফর করার কথা রয়েছে। তার সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও বাণিজ্যিক চুক্তি সই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত স্থবির অবস্থায় ছিল। তবে নতুন এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যকার বোঝাপড়া বাড়াতে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করতে সহায়ক হবে।
ইসহাক দারের সফরের সময় পাকিস্তানের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও ঢাকা সফরে আসবে, যা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের দিকেও অগ্রগতি ঘটাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এই আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় প্রবেশ করতে পারে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।