বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ আটজনকে আদালতে হাজির করা হয়। বুধবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে তাদের হাজির করা হলে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বেশ অস্থিরতা প্রকাশ করেন কামাল আহমেদ মজুমদার। আদালতে উপস্থিত হয়ে কামাল আহমেদ মজুমদার তার আইনজীবীর সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেন এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। তিনি আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, “আমাকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা নিচ্ছে না কেন?” তার আইনজীবী বিষয়টি দেখছেন বলে আশ্বস্ত করলেও তিনি বারবার একই প্রশ্ন করেন।
সকাল ১০টা ৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে বসেন। এসময় আইনজীবী ওকালতনামায় কামাল আহমেদ মজুমদারের স্বাক্ষর নেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সিআইডির ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার, আসামিদের বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন, অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামি কামাল আহমেদ মজুমদারের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট ঢাকার মিরপুর গোলচত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত হন আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী। নিহত আনোয়ারের বাবা আল আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, সরকারবিরোধী আন্দোলন দমাতে গুলি চালানো হয়, যা আনোয়ারের মৃত্যু ডেকে আনে।
এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার, সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর সালেহীন ইমন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি এবং ছাত্রলীগ নেতা কাউসার ও রমজান।
আদালতের রিমান্ডের আদেশের পর আসামিদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় এবং পরবর্তী তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুতি গ্রহণ করে।