বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী রিয়াদে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের ইতিহাসে সাধারণ কর্মী নিয়োগ বিষয়ে এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি। এর আগে ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি চুক্তি হলেও, এবার সাধারণ শ্রমিক নিয়োগের বিষয়টি আইনি কাঠামোয় আনা হলো।
চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ, আধা-দক্ষ ও সাধারণ কর্মী সৌদি আরবে পাঠানোর সুযোগ বাড়বে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, কর্মীর অধিকার সুরক্ষা, আকামা নবায়ন, সময়মতো এক্সিট ভিসা প্রদান এবং ডিজিটাল যাচাইকরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম চালু হবে।
ড. আসিফ নজরুল বৈঠকে সৌদি কর্তৃপক্ষকে কর্মীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। জবাবে সৌদি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার অংশীদার, এবং এই চুক্তি মানবসম্পদ উন্নয়নে নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।
চুক্তি কার্যকর হলে আগামী দুই বছরে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা কমপক্ষে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ২৭ লাখ কর্মী কাজ করছেন, যারা বছরে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, এ উদ্যোগ শুধু রেমিট্যান্স বৃদ্ধি নয়, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অভিবাসন খাতে শ্রমিক সুরক্ষা ও দক্ষ কর্মী রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ।


