ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সাত মাস ধরে রাখা এক যুবকের মরদেহ, যিনি গত বছর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, অবশেষে শনাক্ত হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার নাম প্রকাশিত হয়েছে – হাসান (২০)। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে মরদেহের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়, তবে মরদেহটি শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মর্চুয়ারিতে রাখা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শুক্রবার বাদ জুমা হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর, গণহত্যার বিচারের দাবিতে একটি কফিন মিছিল বের হবে, যা আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত হবে। হাসানের বাবা, মনির হোসেন জানান, ১২ জানুয়ারি তার ভাই এবং হাসানের খালা ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশে তারা ডিএনএ নমুনা দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি হাসানের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তাদের নমুনার মিল পাওয়া যায়। তারপর মরদেহ শনাক্ত করে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে তাকে গ্রহণ করেন।
হাসানের পরিবারের বসবাস ভোলার কাছিয়া সাহা মাদার গ্রামে, তবে হাসান যাত্রাবাড়ীর সুতিখালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় থাকতেন। তিনি গুলিস্তান এরশাদ মার্কেটে একটি ইলেকট্রিক দোকানে কাজ করতেন। হাসান ছিল তার পরিবারের বড় সন্তান এবং দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার আগে। ৫ আগস্ট বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। এরপর এক যুবকের পায়ে প্যাঁচানো অবস্থায় যাত্রাবাড়ীর রাস্তায় একটি মরদেহ পড়ে থাকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যা পরবর্তীতে হাসানের মরদেহ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের ইনচার্জ রামু চন্দ্র দাস জানান, “এটি একটি মরদেহ যা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিল, এবং ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত মর্চুয়ারিতে ছয়টি মরদেহ রাখা রয়েছে এবং সবগুলোই ময়নাতদন্তের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে।”
তবে, যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মো. মোরশেদ আলম জানান, ১৩ জানুয়ারি নিহতের পরিবারের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছিল এবং ১২ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত হওয়া মরদেহটি তাদের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলে যায়।