বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ১০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে সহায়তার জন্য বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে, যা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ না হওয়া পর্যন্ত চালু থাকবে। পর্যায়ক্রমে আরও ৭০ জন শিক্ষার্থীকে এই সহায়তা দেওয়া হবে। এদিন আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের পরিবার এবং আন্দোলনে শহীদদের অভিভাবকরা।
জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ রায়হান বলেন, “এই উদ্যোগের মাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীরা যেন তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।” সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে দাতা অভিভাবক থাকবেন। শিক্ষার্থীরা কোনো বিশেষ প্রয়োজনে তাদের দাতা অভিভাবকের কাছ থেকে অতিরিক্ত সহায়তা চাইতে পারবে।
আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ফিজিক্যাল থেরাপি এসোসিয়েশন। তারা ঘোষণা দিয়েছে, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। আন্দোলনে আহত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “স্বৈরাচার সরকারের পতনের ছয় মাস পার হলেও আমাদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। যারা আন্দোলন করেছিলাম, তাদের অধিকাংশের অবস্থা এখন করুণ। কিন্তু এই উদ্যোগ আমাদের নতুন আশার সঞ্চার করেছে।”
বিএফ শাহীন কলেজের শহীদ ছাত্র আহনাফের মা বলেন, “আমার ছেলেকে হারিয়েছি। কিন্তু তার হত্যার বিচার তো দূরে থাক, অপরাধীরা জামিনে মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই উদ্যোগ হয়তো কিছুটা হলেও আমাদের ব্যথা লাঘব করবে।” অনুষ্ঠানে বক্তারা আহত ও শহীদ শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “আমাদের সন্তানদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না, যদি আমরা তাদের শিক্ষার দায়িত্ব নিতে পারি। সমাজের প্রতিটি মানুষকে এই আন্দোলনের স্মৃতি ও শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়বদ্ধতা মনে রাখতে হবে।”