সরকারের পক্ষ থেকে এখনো ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ না হলেও বিএনপির নেতারা নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা জনগণের কাছে ইতিবাচক রাজনীতি এবং দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বার্তা পৌঁছে দিতে সক্রিয়। দলীয় সূত্র জানায়, ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গঠনের প্রতিশ্রুতি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জনসংযোগ, স্থানীয় কর্মসূচি এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলছেন। গাজীপুর-১ আসনের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারী শাসনের জন্ম হবে না।”
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মাহমুদুর রহমান সুমন জনগণের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে দেওয়া। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে চাই।”
ঢাকা-১৬ আসনে মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক জানান, তিনি প্রতিটি এলাকায় মানুষের কাছে দলের ইতিবাচক রাজনীতির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, বাংলাদেশে স্বচ্ছ রাজনীতির একটি পরিবেশ তৈরি হোক, যেখানে কোনো প্রতিহিংসা থাকবে না।”
অনেক আসনে তিন-চারজন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী এলাকায় কাজ করছেন, যা স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রুপিং ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। কিছু এলাকায় এসব দ্বন্দ্বের কারণে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে দলীয় হাইকমান্ড থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—যে কোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে হবে এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।
স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, “বড় দলে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকা স্বাভাবিক। তবে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। প্রয়োজনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলের নেতারা দাবি করছেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা এবার ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ। নেতাদের মতে, সাধারণ মানুষ ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের সরকার নির্বাচন করতে চান।
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, “জনগণের মনোভাব বলছে, তারা দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি একটি নতুন শাসনব্যবস্থার ধারণা দিচ্ছে, যা মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাইফুল ইসলাম মনে করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি একটি ইতিবাচক এবং পরিবর্তনমুখী রাজনীতির বার্তা নিয়ে এগোচ্ছে। তিনি বলেন, “বিএনপির নেতারা যেভাবে জনগণের সঙ্গে কাজ করছেন, তা দলটির জনপ্রিয়তা বাড়াচ্ছে। তবে গ্রুপিং এবং সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য নেতাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।”
বিএনপির নেতারা মাঠপর্যায়ে সক্রিয় থাকলেও এখনো কেন্দ্রীয় নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচনি প্রচারে অতিরিক্ত ব্যস্ত না হওয়ার। তবে জনসংযোগ এবং ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। দলীয় নেতাদের বিশ্বাস, এই সাংগঠনিক তৎপরতা আগামী নির্বাচনে বিএনপির জন্য সুফল বয়ে আনবে।


