বরগুনায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবার এবং মাগুরায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণকারী শিশুর বড় বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারা নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ ও ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা যেকোনো ধরনের সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। যদি কেউ এই পরিচয় প্রকাশ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আদালত মনে করেন, অনেক মানুষ এই আইন সম্পর্কে জানে না, যার ফলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিচয় গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে যায়। এজন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে, যাতে মানুষ আইন সম্পর্কে অবগত হয় এবং নির্যাতিতদের গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।
আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের এই আদেশকে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেন, বিচারপ্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে তারা ভয়ভীতির বাইরে থেকে ন্যায়বিচার পেতে পারেন। অপরদিকে, মানবাধিকার কর্মীরাও আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলো যাতে কোনো হুমকি বা হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন যদি কার্যকরভাবে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করে, তাহলে নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলো ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়ায় আরও সাহসী হতে পারবে।