বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ দুই স্থানে সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। পঙ্গু হাসপাতালের সামনে ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা দাবি তুলেছেন, বারবার আশ্বাসের পরও তাদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হয়নি।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। আহতরা জানান, আন্দোলনের সময় তারা গুরুতর আঘাত পেলেও এখন পর্যন্ত সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য কার্ড ও পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। চিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না বলে জানান।একই দাবিতে রাত ১১টার দিকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কও অবরোধ করেন আহতদের আরেকটি দল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা ইনস্টিটিউটের ভেতরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। পরে দাবি আদায়ের জন্য তারা রাস্তায় নামেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কেউ এক চোখ হারিয়েছেন, কেউ দুই চোখেই মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তবুও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের।
আহতরা জানান, সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে একদল চিকিৎসক তাদের চোখ পরীক্ষা করতে এলেও সেটা ছিল সীমিত সময়ের জন্য। ফলে অনেক রোগীর সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারা বলেন, “এটি অনেকটাই লোকদেখানো চিকিৎসা ছিল। আমাদের স্থায়ী চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রয়োজন।” আন্দোলনকারীরা ক্ষতিপূরণ নিয়েও অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ সহায়তা পেতে দীর্ঘ হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকজন কিছু ক্ষতিপূরণ পেলেও বেশিরভাগ আহত ব্যক্তিরা এখনো কোনো সহায়তা পাননি।
বিক্ষোভের কারণে আগারগাঁও থেকে শিশু মেলা লিংক রোড পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, “আমাদের এই কষ্টের চেয়ে বেশি কষ্ট আমরা সহ্য করছি চিকিৎসা না পেয়ে। আর কোনো আশ্বাস নয়, এবার আমরা লিখিত রূপরেখা বা গেজেট না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।” সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আন্দোলনকারীরা জানান, তারা চূড়ান্ত সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থেকে যাবেন।