রাজধানী ঢাকার বাতাস দিন দিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইকিউএয়ার-এর তথ্যানুযায়ী, ঢাকার বায়ুমান সূচক (AQI) স্কোর ৩১৮, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ (Hazardous) হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে। একই সময়ে পাকিস্তানের লাহোর শহর (AQI ২৬১) দ্বিতীয় স্থানে এবং ভারতের দিল্লি (AQI ২৩১) তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া ভিয়েতনামের হ্যানয় (AQI ১৭৭) এবং ভারতের কলকাতা (AQI ১৭২) যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
ঢাকার বায়ুদূষণের বর্তমান মাত্রা সাধারণ মানুষের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চমাত্রার দূষিত বাতাসে দীর্ঘদিন শ্বাস নিলে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া, শিশু ও প্রবীণদের ক্ষেত্রে এই দূষণ আরও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
অতিরিক্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া
নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক ব্যবহার করা
গাছপালা রোপণ ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকায় বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হলো ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণ কাজের ধুলাবালি এবং শিল্পকারখানার বর্জ্য। শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় ধুলা ও দূষণ দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে ভাসমান থাকে, ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। পরিবেশবিদরা মনে করেন, সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সরকারের উচিত—
1. ইটভাটাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা
2. পরিবেশবান্ধব যানবাহন চালুর ব্যবস্থা করা
3. নগর পরিকল্পনায় সবুজায়নের গুরুত্ব দেওয়া
বায়ুদূষণ শুধু ঢাকা নয়, বরং বিশ্বের বিভিন্ন মেগাসিটির জন্য একটি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে ঢাকার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়বে। তাই সরকার ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দূষণ কমানো এখন সময়ের দাবি।