চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম *দ্য টেলিগ্রাফ*। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে নির্দেশ দেন, যার ফলে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন।
প্রসিকিউশনের দাবি, শেখ হাসিনার নির্দেশেই নিহতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং আহতদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়। তবে শেখ হাসিনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার তথ্যমতে, তার ১৫ বছরের শাসনের শেষ পর্যায়ে হওয়া গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১,৪০০ জন প্রাণ হারান।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরোধিতা থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন অল্প সময়ের মধ্যেই শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে দেশব্যাপী রূপ নেয়। পরবর্তীতে ৫ আগস্ট তিনি হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেন বলে জানা যায়। একই দিনে ঢাকায় বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। প্রসিকিউটর ময়নুল করিম জানান, “আমাদের কাছে অডিও, ভিডিও ও সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে যা শেখ হাসিনার সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে।”
রবিবার থেকে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবীরা যুক্তি উপস্থাপন শুরু করবেন। নভেম্বরের মধ্যভাগে রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে।
এদিকে, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও বাংলাদেশে অনুপস্থিত অবস্থায় দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা, যেখানে বিএনপি বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।