তারেক রহমানের অপেক্ষায় পুরো দেশ তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে বহু নক্ষত্র উঠেছে, বহু নক্ষত্র মিলিয়ে গেছে। কেউ ছিলেন উজ্জ্বল, কেউ ক্ষণিকের আতশবাজি। কিন্তু কিছু নাম রয়েছে, যাঁদের সঙ্গে দেশের ইতিহাস জড়িয়ে থাকে অনিবার্য সূত্রে-দুঃসময়, উত্তরণ, সংগ্রাম ও রাজনৈতিক স্বপ্নের সঙ্গে। তারেক রহমান বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমনই এক নাম।
তাঁর প্রতি মানুষের প্রত্যাশা, তাঁকে ঘিরে জনমানসে জমে ওঠা ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা এবং তাঁর মা খালেদা জিয়ার চিকিৎসাজনিত সংকট-সব মিলিয়ে আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিভাষায় ‘অপেক্ষা’ শব্দটি নতুন অর্থ লাভ করেছে। তারেক রহমানের অপেক্ষায় পুরো বাংলাদেশবাংলাদেশ কি সত্যি তারেক রহমানের অপেক্ষায়? হ্যাঁ, কিন্তু এটি কেবল দলীয় রাজনীতির প্রশ্ন নয়, এটি রাজনৈতিক ভারসাম্য, নেতৃত্বের অভাব, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথরেখা ও একজন মায়ের অসুস্থতায় দেশের আবেগ-সবকিছুর সমষ্টিগত এক প্রকাশ। এই লেখায় রয়েছে সেই বাস্তবতারই প্রতিফলন, যেখানে রাজনীতির বিশ্লেষণ, ইতিহাসের তুলনা, সমাজের প্রতীক্ষা এবং মায়ার সম্পর্ক এক স্রোতে মিশে গেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে এক অদ্ভুত বিভাজনের যুগে দাঁড়িয়ে। রাজনীতির মাঠে পারস্পরিক শ্রদ্ধা নেই, যুক্তি-পাল্টাযুক্তি নেই, বহু বছর বিরোধী রাজনীতির চর্চা নেই বললেই চলে। গত ১৮ বছর ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক আধিপত্য এতটাই বিস্তৃত ছিল যে ভিন্ন কণ্ঠের প্রয়োজনীয়তাই আজ নতুন করে অনুভূত হয়। একদলীয় প্রবণতা কখনো দীর্ঘস্থায়ী স্থিতি আনে না, বরং নতুন সংকটের উপাদান তৈরি করে। আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভারসাম্য পুনঃস্থাপনে সক্ষম নেতৃত্বের সংকট হয়ে উঠেছে। এই সংকট সমাধানে জনগণের দৃষ্টি স্বাভাবিকভাবেই গেছে তারেক রহমানের দিকে, যিনি বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁর প্রতি জনসাধারণের আশা শুধু দলের সুসংগঠন নয়, বরং দেশের পুরো রাজনৈতিক ভূগোলকে পুনরায় ভারসাম্যপূর্ণ করার প্রত্যাশা। ইতিহাসের পরম্পরায় রাজনীতিতে তারেক রহমানের ভূমিকা পরিণত হয়েছে প্রতীকে। তারেক রহমান এমন একটি রাজনৈতিক ঐতিহ্যের উত্তরসূরি, যা বাংলাদেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাজারমুখী অর্থনীতি ও শক্তিশালী রাষ্ট্রযন্ত্রের কাঠামো উপহার দিয়েছিল।
বিএনপির পুনর্গঠনে তাঁর সাংগঠনিক ভূমিকা অতুলনীয়। ২০০১ থেকে ২০০৬-এই সময়কালে তিনি দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর কাজ শুরু করেন। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে দলের পুনর্গঠন, শিক্ষিত তরুণদের রাজনীতিতে যুক্ত করা, আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার ব্যবহার, রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি-এসবই তাঁকে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনিবার্য সম্ভাবনা হিসেবে দাঁড় করেছে, প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ২০০৭ সালের রাজনৈতিক সংকট ছিল বাংলাদেশের অন্যতম কঠিন সময়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চাপ, গ্রেপ্তার, নির্যাতন-সবকিছু মিলিয়ে তাঁকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।


