শরীয়তপুরের প্রায় ৩০টি গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রমজান পালন শুরু করেছেন। শুক্রবার রাতে তারাবির নামাজ আদায় করে শনিবার (১ মার্চ) থেকে তারা রোজা রাখা শুরু করেছেন। সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারীরা ১৯২৮ সাল থেকে এভাবেই রোজা ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রায় ১০০ বছর ধরে বাংলাদেশের মূল ধারার চেয়ে একদিন আগে রোজা ও ঈদ উদযাপন করে আসছেন। দরবারের ভক্ত ও অনুরাগীরা বিশ্বাস করেন, চাঁদ পৃথিবীর যেকোনো স্থানে দেখা গেলেই রোজা ও ঈদ পালন করা যায়। সে কারণে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা এই রীতি অনুসরণ করেন।সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (খাদেম) মুনসুর আলী মৃধা বলেন, “পৃথিবীতে চাঁদ একটাই। তাই সৌদিতে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা রোজা ও ঈদ পালন করি। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথা মেনে আসছে আমাদের দরবারের অনুসারীরা।”
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, কেদারপুর, চাকধ, চন্ডিপুরসহ ৩০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এই রীতি অনুসরণ করেন। শুক্রবার রাতে তারা তারাবির নামাজ আদায় করেন এবং সেহরি খেয়ে শনিবার রোজা রাখা শুরু করেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের এক ভক্ত শাহজালাল সিকদার মিথুন বলেন, “আমার পূর্বপুরুষরাও মধ্যপ্রাচ্যের সময় অনুসারে রোজা রাখতেন। আমরা বংশ পরম্পরায় এই ধারাই অনুসরণ করে আসছি।” সুরেশ্বর দরবার শরিফে পবিত্র রমজান উপলক্ষে বিশেষ ধর্মীয় আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টায় প্রথম তারাবির জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা জুলহাস উদ্দিন এবং শোয়া ৮টায় দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন হাফেজ আব্দুল কাদির।
দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সুরেশ্বর দরবার শরিফের অনুসারীরা সেই বিতর্ক এড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ম অনুসরণ করে রোজা ও ঈদ উদযাপন করেন। তাদের মতে, এটি তাদের দীর্ঘদিনের ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং তা পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। সুরেশ্বর দরবার শরিফের খাদেম মুনসুর আলী মৃধা বলেন, “আমাদের দরবারের অনুসারীরা আজ থেকে পবিত্র রোজা পালন শুরু করেছেন। আমরা সবার জন্য মঙ্গল কামনা করি এবং সবাইকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানাই।”