দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের সম্ভাবনা ঘিরে সৃষ্ট আতঙ্কে বড় ধাক্কা খাওয়া দেশের পুঁজিবাজার আবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। গতকাল দেশের শেয়ারবাজারে গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন দেখা গেলেও, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে ফিরেছে স্বস্তির ছোঁয়া।
বাজার বিশ্লেষকদের ভাষায়, অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হঠাৎ শেয়ার বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই সুযোগে কিছু গোষ্ঠী বাজারে দরপতনের সময় শেয়ার কিনে লাভের পথ তৈরি করেছে। তবে আতঙ্ক কাটায় এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আসায় বিনিয়োগকারীরা আবার আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী। সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬২ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৬৫ দশমিক ০১ পয়েন্টে, যেখানে গতকাল এই সময়ের মধ্যে সূচক ৬০ পয়েন্টের বেশি পড়ে গিয়েছিল।
এসময় পর্যন্ত ডিএসইতে মোট ৩৮০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩৩৩টির দাম বাড়ে, যা মোট লেনদেনের ৮৭ শতাংশের বেশি। বিপরীতে দর হারায় মাত্র ১৮টি এবং ২৯টির দর অপরিবর্তিত থাকে।
বুধবার বাজারে বিপর্যয়ের নেপথ্যে ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা। মঙ্গলবার রাতে ভারতের হামলা এবং পাকিস্তানের পাল্টা জবাবে সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। এতে বুধবারের লেনদেনে প্রায় ৯০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যায়। ডিএসইএক্স সূচক সেদিন ১৪৯ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা ৩.০১ শতাংশ পড়ে যায়।
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্থির হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয়ের প্রভাব কমেছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের সংযম প্রদর্শনের ইঙ্গিত এবং নতুন করে বড় কোনো সংঘাত না ঘটায় কিছুটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে বাজার উন্নয়নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আশাবাদের সঞ্চার করেছে। সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।