বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার চাল আমদানির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। জি টু জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে ২৩ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানিকৃত সাড়ে সাত হাজার মেট্রিক টন চাল নিয়ে দুটি জাহাজ চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। শুক্রবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এমভি পিটিভি অ্যারোমা নামের জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ২৩ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, ভারত থেকে আমদানিকৃত সাড়ে সাত হাজার মেট্রিক টন চাল নিয়ে এমভি আলফা মংলা বন্দরে এসেছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এসব চাল দ্রুত খালাসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এছাড়া, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানিকৃত আরও ৮,৫০০ মেট্রিক টন এবং ১০,০০০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে আরও দুটি জাহাজ শনিবার ও রবিবার মংলা বন্দরে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা।
চাল আমদানির এই প্রবাহ এর আগেও অব্যাহত ছিল। গত বুধবার ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। এসব চাল খাদ্য অধিদপ্তর আমদানি করেছে, যা সরকারি খাদ্য মজুত বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সরকারি সূত্র জানায়, দেশে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে এই আমদানি করা হচ্ছে। বিশেষ করে খাদ্য মজুত বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার নানান উদ্যোগ নিচ্ছে।
খাদ্য অধিদপ্তর জানায়, সরকারি গুদামে বর্তমানে পর্যাপ্ত চাল মজুত রয়েছে, তবে ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমদানি অব্যাহত রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এই আমদানি কার্যক্রম চালের বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ভালো থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে খাদ্যশস্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই সরকার আগেভাগেই প্রয়োজনীয় চাল মজুত করে সম্ভাব্য সংকট এড়াতে কাজ করছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমদানি করা চাল সুষ্ঠুভাবে গুদামে সংরক্ষণ ও বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে টিসিবি ও ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল) মাধ্যমে কম দামে চাল বিক্রির উদ্যোগও নেওয়া হতে পারে।সরকারের এই আমদানি কার্যক্রমের ফলে দেশে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, বাজারে মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনাও কমবে, যা সাধারণ জনগণের জন্য স্বস্তির বিষয়।