ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে তৈরি ‘আনন্দ শোভাযাত্রার’ দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তি ঢাবির আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রাকিব, যিনি এক সময় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, “ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু হয় এবং সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।” তিনি জানান, রবিউল ইসলাম রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এস এম সাজ্জাদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, “রবিউল ইসলাম রাকিবকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামীকাল সোমবার, শোভাযাত্রা শুরুর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।”
ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শনিবার ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে একজন যুবক মুখে মাস্ক পরে চারুকলার তিন নম্বর গেটের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। তার পরনে ছিল কালো টি-শার্ট ও খাকি রঙের প্যান্ট। তিনি কয়েক মিনিটের মধ্যেই ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফে আগুন দেন এবং দেয়াল টপকে স্থান ত্যাগ করেন। আগুনের ফলে ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফের একটি অংশও পুড়ে যায়।
চারুকলার শিক্ষার্থীদের দাবি, এই ধরনের হামলা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিচর্চার ওপর নয়, বরং পুরো বাঙালি জাতিসত্তার ওপর আঘাত। তারা অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ রক্ষার আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা ঢাবির নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। অনেকে বলছেন, চারুকলার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল জায়গায় ভোরবেলায় নিরাপত্তার ঘাটতি থাকাটা হতাশাজনক।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্তে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং শোভাযাত্রা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।