আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, “পঞ্চগড়ের মানুষ যদি মনে করে আমি বা তরুণ অন্য কেউ সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, তবে তার সেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত। আমরা মানুষের চাওয়া নিয়েই কাজ করেছি। সব কর্মসূচি ছিল মানুষের চাহিদা ও চেতনা বুঝে। মানুষ এখন চায়, আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা তাদের প্রতিনিধি হয়ে সংসদে কাজ করুক।”
অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় পৌরসভার প্রায় দুই হাজার মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন তিনি। এ সময় তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরে সারজিস বলেন, “বিগত ১৬ বছরে রংপুর বিভাগ এবং পঞ্চগড়ের মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়েছে। প্রয়োজনীয় উন্নয়নকাজ হয়নি, একটি শিল্প কারখানাও স্থাপিত হয়নি। আমরা পঞ্চগড়ের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করব। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া সুযোগকে আমানত মনে করি, এবং এই আমানত মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাব।” নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “জনগণের চাওয়া কেবল একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় জনগণের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসুক, এটিই এখন প্রয়োজন। তবে ৬ মাসের মধ্যে নতুন ভোটার তালিকা, নির্বাচন কমিশন সংস্কার, বিচারব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পুনর্গঠন করা প্রায় অসম্ভব। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।”
তিনি আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী যে অভ্যুত্থান ঘটেছে, তা জনগণের অধিকার রক্ষায় একটি মাইলফলক। সারজিস বলেন, “অভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে আমরা যে স্বপ্ন দেখি, তার বাস্তবায়নের জন্য সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আলোচনার ফলাফল শিগগিরই প্রকাশ পাবে।” অনুষ্ঠানে স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়ে সারজিস বলেন, “আমাদের অনেক বিত্তবান আছেন, যারা সামান্য সদিচ্ছা দেখালে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ তারই একটি উদাহরণ।” তিনি জানান, শীতবস্ত্রগুলো পর্যায়ক্রমে পঞ্চগড়ের প্রতিটি ইউনিয়নে বিতরণ করা হবে।
সারজিসের এ বক্তব্যে উপস্থিত তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আশার সঞ্চার হয়েছে।


