বাংলাদেশের বরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ ও মাদ্রাসা শিক্ষা সংস্কারের অগ্রদূত আল্লামা মুহাম্মদ সুলতান যওক নদভী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)। শুক্রবার (২ মে) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
শনিবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া প্রাঙ্গণে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় দেশব্যাপী হাজারো আলেম, ছাত্র, শুভানুধ্যায়ী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। পুরো পরিবেশ ছিল শোকাভিভূত।
গত ১৮ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আল্লামা সুলতান যওক নদভীকে চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে কয়েক দফা আইসিইউতে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি ইন্তেকাল করেন।
আল্লামা মুহাম্মদ সুলতান যওক নদভী চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সর্বশেষ কমিটির প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। কওমি মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষা বোর্ড ‘আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের’ সভাপতির দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল লিগ অব ইসলামিক লিটারেচার’-এর বাংলাদেশ ব্যুরো চিফ হিসেবেও আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে জন্মগ্রহণ করা আল্লামা নদভী বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, আরবি সাহিত্যিক ও কবি হিসেবে তার খ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিল। শুধু আরবিতেই নয়, উর্দু ও ফার্সি ভাষায়ও তিনি অসাধারণ সাহিত্যচর্চা করেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আল-হাইয়াতুল উলিয়ার চেয়ারম্যান ও বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে ইসলামি শিক্ষা অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হলো বলে মন্তব্য করছেন বিশিষ্টজনেরা।