দেশের ব্যাংক খাত বর্তমানে খেলাপি ঋণের লাগামছাড়া বৃদ্ধির মুখে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ২ শতাংশ। মাত্র ছয় মাস আগেও এই হার ছিল ১২ শতাংশ। অর্থাৎ, জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে ব্যাংক খাতে অনিয়ম, বিশেষ করে পরিচালনা পর্ষদের ব্যর্থতা এবং আর্থিক জালিয়াতির কারণে অনেক ঋণ এখন আর আদায়যোগ্য অবস্থায় নেই। যার ফলে এসব ঋণ এখন খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে গঠন করা হয়েছে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স, যার মূল দায়িত্ব ব্যাংক খাতের সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। এসব ব্যবস্থার মাধ্যমে খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরা এবং ব্যাংক খাতকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা চলছে।
তারল্য সংকট নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানত ও ঋণের সুদের হার সমন্বয় করেছে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ব্যাংক ঋণের চাহিদা কমেছে, তবে আমানতের হার বাড়ায় সঞ্চয়ের প্রবণতা কিছুটা বেড়েছে। জানুয়ারি শেষে অতিরিক্ত তারল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকায়, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে এই মুদ্রানীতি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তারা আশা করছে, চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও জবাবদিহিতার অভাব না কমালে খেলাপি ঋণের প্রকৃত সমাধান সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপই পারে এই খাতকে টেকসই পথে ফিরিয়ে আনতে।
প্রয়োজনে আমি এ রিপোর্টকে আরও নির্দিষ্ট কোনো ধারায় বা সংবাদমাধ্যমের ধরনে (যেমন রিপোর্ট, মতামত, বিশ