স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দেশজুড়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। মঙ্গলবার যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “ওসিদের ঘুস নেওয়ার প্রবণতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—যেখানে দুর্নীতির প্রমাণ মিলবে, সেখানে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, পুলিশে এখনও তদবির সংস্কৃতি চলমান, যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নষ্ট করছে।
মতবিনিময় সভায় তিনি হালকাভাবে বলেন, উপদেষ্টা হওয়ার পর তার “আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সংখ্যা বেড়ে গেছে।” তিনি সতর্ক করেন, “আমার নামে কেউ তদবির করতে এলে প্রথমে চা-নাস্তা দিন, তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিন।”
সভায় তিনি আরও বলেন, পুলিশে তেলবাজি সংস্কৃতি ফেরানোর চেষ্টা চলছে, যা প্রশাসনকে দুর্বল করে। তিনি নির্দেশ দেন, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে এবং পুলিশকে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে।উপদেষ্টা জানান, সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে, যা প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করলে অবশ্যই ইউনিফর্ম পরিধান করতে হবে। সিভিল ড্রেসে কাউকে তুলে নেওয়া যাবে না।”
তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা মাদক প্রতিরোধে নিরাময় কেন্দ্র খুলতে চাই না, বরং মাদক বন্ধ করতে চাই। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি অ্যাকশন না নেন, তাহলে তাদের চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে না।”
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল জেএম ইমদাদুল ইসলাম, খুলনা বিভাগের ডিআইজি মো. রেজাউল হক, জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার রওনক জাহানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এই মতবিনিময় সভা প্রশাসনের শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ও জনআস্থার প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।