চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগামী দুই বছরের মধ্যে শিল্প স্থাপন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে দেড় হাজার একর জমি। পাঁচশ একর জায়গায় নির্মিত হবে আন্তর্জাতিক মানের মাস্টার ডেভেলপার এবং সম্পূর্ণ চালু হলে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ প্রকল্পে ইতোমধ্যেই ১৪টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে চলে এসেছে এবং আরও ২৮টি প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন রয়েছে।
মিরসরাই থেকে সোনাগাজি পর্যন্ত ৩৩ হাজার একর জায়গা জুড়ে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি দেশের বৃহত্তম প্রক্রিয়া। বর্তমানে ১১ হাজার একরে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে এবং বঙ্গোপসাগরের জলরাশির সুবিধা নিয়ে এটি উপকূলে দাঁড়িয়ে আছে একটি শক্তিশালী শিল্পমহল হিসেবে। কোলগেট, এশিয়ান পেইন্টস, টিকে গ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানি এখানে কার্যক্রম শুরু করেছে, যা এই অঞ্চলের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বেজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের দুটি জোনে মোট ১৫০০ একর জমি রয়েছে। আগামী দুই বছরে এই জমিগুলো শিল্প স্থাপন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের উন্নয়নকারীরা তাদের কাজ শুরু করবে। ১৫২টি প্লটে বিনিয়োগের জন্য ১৯ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ হতে পারে।
এখানে উৎপাদনসহ নানা ধরনের শিল্প স্থাপনে সরকারের তরফ থেকে ব্যাপক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। বেজার কনসালটেন্ট আবদুল কাদের খান জানিয়েছেন, সংকট নিরসনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে মুহুরি প্রজেক্ট থেকে পানি আনা হচ্ছে এবং শ্রমিক সংকটের সমাধানও করা হয়েছে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সাগর পথে শিল্পপণ্য পরিবহনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে একটি জেটি।
এই প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ঢাকায় বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী একদল বিনিয়োগকারী এই অঞ্চলের পরিদর্শন করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এখানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এখানে ব্যাংক শাখা স্থাপন করা হয়েছে এবং আধুনিক হাসপাতালেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, সরকার এই অঞ্চলের উন্নয়নে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে পারে।
মিরসরাইয়ের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোপুরি চালু হলে ৫০০ কারখানায় ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় মাইলফলক হতে চলেছে।