Friday, May 23, 2025
Home অর্থ-বানিজ্য ২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন

২৬ দিনে এলো প্রায় তিন বিলিয়ন

দেশে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষে বৈধ পথে অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ব্যাংকাররা বলছেন, অর্থপাচার কমে আসায় প্রবাসীরা এখন বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে বেশি উৎসাহী হচ্ছেন। এর ফলে রমজান মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে এসেছে ২৯৪ কোটি মার্কিন ডলার। ফেব্রুয়ারি মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার। ব্যাংকারদের আশা, বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চের শেষ নাগাদ প্রবাসী আয় ৩০০ কোটি (তিন বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে যেখানে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ১৬১ কোটি ডলার, সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে এসেছে ২৯৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এক বছরে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮২.৪ শতাংশ।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৩৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৪ শতাংশ বেশি।

গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।

প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ফলে দেশের ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটিও অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।

এর আগে ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে রেমিট্যান্সের ডলার কেনার প্রবণতা বেশি ছিল। ফলে একসময় প্রতি ডলারের দর ১২৮ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তবে এখন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই রেমিট্যান্স ডলার কিনছে, যা আমদানির ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

প্রবাসী আয় হলো দেশে বৈদেশিক মুদ্রা জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। এর বিপরীতে কোনও বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয় না, বা কোনও দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। অপরদিকে রফতানি আয়ের ক্ষেত্রে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে বিদেশি মুদ্রা খরচ হয়। বিদেশি ঋণ পরিশোধেও ডলার প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বাড়লে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে, মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। বিশেষ করে ঈদ সামনে রেখে এই উচ্চমাত্রার রেমিট্যান্স দেশে খুচরা বাজার ও ভোক্তা ব্যয়ের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

ঈদযাত্রা ২ জুনের অগ্রিম ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেন যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ৭ জুন ধরে বুধবার (২১ মে) থেকে আন্তঃনগর...

দুই দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে কমেছে এক হাজার টিইইউ কনটেইনার, রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা

চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতির কারণে খালাস ধীর হয়ে বন্দরে তৈরি হওয়া কনটেইনার জট কমতে শুরু করেছে। দুই দিনের ব্যবধানে এক হাজার টিইইউ কনটেইনার কমেছে...

এনআরবি ব্যাংকের পর্ষদ সভার নতুন তারিখ ঘোষণা

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এনআরবি ব্যাংক পিএলসি পর্ষদ সভার নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৯ মে দুপুর ২টা ৩০মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ...

সামর্থ্য থাকার পরও ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে কি?

কোরবানির ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। চলতি বছর চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে সৌদি আরবে ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৬ জুন। সেই হিসেবে বাংলাদেশে...

Recent Comments