দীর্ঘ ১৫ বছর পর ফের অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, যা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) নামে পরিচিত। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। দুই দেশের প্রতিনিধিদল বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সাংস্কৃতিক বিনিময়, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণসহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক দুই দেশের মাঝে বরফ গলা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। বৈঠকে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয় এবং দুই দেশই পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনার পাশাপাশি পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। এই সাক্ষাৎগুলোতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সর্বশেষ বাংলাদেশ-পাকিস্তান এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে বর্তমান এই আলোচনা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা তৈরি করছে। এছাড়া পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের এই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এলে তা হবে ২০১২ সালের পর পাকিস্তানি কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক কূটনৈতিক এই অগ্রগতি শুধু দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় বৃহত্তর আঞ্চলিক সংযোগ ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই বৈঠক ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।