সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, খুন এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত ছিল। এতে দেশ-বিদেশে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের পর ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তার দল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দলটির বিরুদ্ধে একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যা বিচারাধীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এখন দলটির নেতৃত্বের কৌশলের ওপর নির্ভর করছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, “জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। তাদের উচিত আত্মসমালোচনা করা এবং গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধ থাকা।” অন্যদিকে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মনে করেন, “আওয়ামী লীগকে এখনই চূড়ান্তভাবে বাতিল ঘোষণা করা ঠিক হবে না। তবে তারা যে ভয়াবহ অপরাধে জড়িত ছিল, তা আর গোপন নেই। সঠিক বিচার হলে এ দলের নেতৃত্ব পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, “শেখ হাসিনা এখন আওয়ামী লীগের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলটি যদি তাকে ছাড়তে পারে এবং নতুন নেতৃত্ব খুঁজে পায়, তাহলে ভবিষ্যতে টিকে থাকতে পারবে। অন্যথায়, তারা অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।”
এদিকে, আইনজীবী ওমর ফারুক মনে করেন, “জাতিসংঘ কোনো দল নিষিদ্ধের সুপারিশ করেনি, তবে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তারা যদি বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ থাকবে না।” পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। আওয়ামী লীগ কি নেতৃত্ব পরিবর্তন করে নতুন কৌশলে এগোবে, নাকি পুরনো পথেই চলবে? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।