সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় ও নিম্ন আদালতে এখন পর্যন্ত ৫৭৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে এসব মামলা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে চারটি মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই গণহত্যার সময় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এছাড়া, শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গুম ও হত্যার অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দ, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ, এবং রাষ্ট্রীয় তহবিল অপচয়ের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ রয়েছে, তার সরকার আমলে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা রাজউকের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিবেচনায় ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করেছে। প্রসিকিউশন টিম জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো তদন্ত শেষ হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নেওয়া হবে।
ট্রাইব্যুনালের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কয়েকটি মামলার বিচার কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ৩-৪টি মামলার রায় দেওয়া হতে পারে। প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচারের গতি ত্বরান্বিত হবে।
এদিকে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু মামলা দেশের বিভিন্ন আদালতে চলমান রয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব মামলার রায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় এনে দিতে পারে।