সাবেক রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক ও তার স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে মোট ১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুদকের দায়ের করা প্রথম মামলায় বলা হয়েছে, মুজিবুল হক তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪১ হাজার ৩৫১ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় মুজিবুল হক ও তার স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তাকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা দুজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকের এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ইতোমধ্যে মুজিবুল হকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ফলে তিনি এখন দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। দুদক সূত্রে জানা গেছে, মুজিবুল হকের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। সম্পদের হিসাবের সঙ্গে তার আয়কর রিটার্ন এবং ব্যাংক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা না হলেও দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবেই এ ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা এই ঘটনাকে সরকারের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন।দুদক জানিয়েছে, এ মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে মুজিবুল হক ও তার স্ত্রীর সম্পদ জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।