২০০৯ সালের পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি বহুদিনের। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলেও এখনো এই ঘটনাকে ঘিরে বিতর্ক থামেনি। সাম্প্রতিক এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দেয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বিচারাধীন মামলার কারণে আপাতত কমিশন গঠন সম্ভব নয়।
রবিবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে বিষয়টি উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। তার বক্তব্যে জানা যায়, আইন মন্ত্রণালয় কমিশন গঠনে ইতিবাচক মতামত দিলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাবেক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেন। সেখানে তিনি জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আইন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৩ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত মতামত প্রদান করেছে, যেখানে আদালতের আদেশ অমান্যের সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করা হয়।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি স্মারক প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আপাতত কমিশন গঠন সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের কোনো উল্লেখ নেই। আসিফ নজরুল বলেন, “বিডিআর হত্যাকাণ্ডের একটি স্বাধীন তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবিষ্যতে কমিশন গঠন করলে আইন মন্ত্রণালয় অবশ্যই সহযোগিতা করবে।”
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এই ঘটনায় দুইটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে এত বড় ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ এবং পরিকল্পনাকারীদের সঠিকভাবে উদঘাটন না হওয়ায় তা নিয়ে জনমনে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হলে এই ঘটনার আসল চিত্র বের হয়ে আসবে এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।