বাংলা ভাষার ডিজিটাল ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি ব্রেইল বইসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ ও ভাষাসমূহের মর্যাদা রক্ষায় নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার প্রসার দেশের উন্নতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাসহ বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।”
সরকারের উদ্যোগে বাংলা ভাষার ডিজিটাল ব্যবহারে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি ওয়েবসাইট, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলা ভাষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির উন্নয়ন, স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ ব্যবস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ফন্ট ও কনটেন্ট বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “ভাষার সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি বিশেষ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাংলার পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষাগুলোর সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখবে।”
বাণীতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের প্রথম জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠিত হয়।”তিনি বলেন, “শত বছরের শোষণ ও শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আমাদের পূর্বসূরিরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের চিরকাল অনুপ্রাণিত করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সরকার একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ভাষা গবেষণা, বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, এবং গণমাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।তিনি সবাইকে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫-এর শুভেচ্ছা জানান এবং এই উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।