ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার মোকাবিলা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন সময়ে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরি। সুষ্পষ্ট সময়সীমা এবং কার্যকরী পরিকল্পনা ঘোষণা করা হলে এটি জনগণের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি করবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে।
শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের আইএবি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একশ দিন পূর্তি এবং দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। তার মতে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এবং এর জন্য সংস্কারের সঠিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা প্রয়োজন।
এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৬টি প্রস্তাবনা প্রদান করা হয়। এই প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ স্পষ্ট করা, নিয়োগের ক্ষেত্রে দোদুল্যমানতা পরিহার করা, নতুন উপদেষ্টাসহ সব নিয়োগে সচ্ছতা নিশ্চিত করা, সংস্কার কার্যক্রমকে গতিশীল ও গণসম্পৃক্ত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা। আরও উল্লেখযোগ্য, স্বৈরাচারী শাসকদের বিচারও এই প্রস্তাবনার অন্তর্ভুক্ত।
চরমোনাই পির আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক রাখার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, শুধু সরকার নয়, জনগণও দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করা এবং জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ দিতে সহায়তা করা।” তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, যদি অন্তর্বর্তী সরকার তার কার্যক্রম গতিশীল না করতে পারে, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ১৫ বছর ধরে প্রশাসনে দলের পক্ষ থেকে করা নিয়োগ এবং দেদে জায়গায় রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে আজ দেশব্যাপী প্রশাসনিক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেন, “সরকারের কাছে যারা আত্মসমর্পণ করেছে বা যারা এখনো পুরনো শাসন ব্যবস্থার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
চরমোনাই পির বলেন, একশ দিনের কার্যক্রমে সরকার অনেক কিছু শিখেছে, তবে এখনও অনেক কাজ বাকি। তাকে মনে হয় যে, দেশের শাসন ব্যবস্থাকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো সময় এবং শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।
এছাড়া, দলের অন্যান্য নেতারা এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবং সরকারের প্রতি তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ সংস্কারের আহ্বান জানান।