টেসলার শেয়ারে বড় ধাক্কার ফলে ইলন মাস্কের সম্পদে ব্যাপক পতন ঘটেছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত টেসলার শেয়ারের দাম ৮ শতাংশ কমেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে মাস্কের মোট সম্পদের ওপর। তিনি তার মোট সম্পদের ১৯.২ শতাংশ হারিয়েছেন, যা প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, টেসলার এই দরপতনের অন্যতম কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা, বিশেষ করে চীনা ইভি নির্মাতাদের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ইউরোপে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি ৩৭ শতাংশ বাড়লেও, জানুয়ারিতে টেসলার বিক্রি প্রায় ৪৫ শতাংশ কমেছে। এই প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যার ফলে কোম্পানির শেয়ারের দাম আরও নিম্নমুখী হয়েছে। মঙ্গলবার টেসলার স্টক ৮ শতাংশ কমে ৩০৫ মার্কিন ডলারে নেমে আসে, যা কোম্পানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে চলে গেছে। এর ফলে টেসলার বাজার মূলধন প্রথমবারের মতো ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমেছে, যা কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলন মাস্কের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ এবং মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে তার সক্রিয় ভূমিকা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। মাস্ক সম্প্রতি মার্কিন রাজনীতিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। টেসলার কর্ণধারের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কোম্পানির ব্র্যান্ড ইমেজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে, বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দা এবং উচ্চ সুদের হারের কারণে অনেক গ্রাহক নতুন গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন, যা টেসলার বিক্রিতে আরও প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি, চীনা কোম্পানিগুলোর তুলনায় টেসলার গাড়ির দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বাজারে তাদের প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে এখনো ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন। যদিও তার সম্পদ কমেছে, তিনি এখনো অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের তুলনায় এগিয়ে আছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেসলার জন্য আগামী কয়েক মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা এখন ভবিষ্যৎ কৌশলের দিকেই তাকিয়ে আছেন।