যানবাহন চলাচল কম থাকলে সাধারণত বায়ুদূষণের মাত্রা হ্রাস পায় বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ছুটির দিনে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সকাল ৮টা ১৯ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (আইকিউএয়ার) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুদূষণ স্কোর ২৩৬। এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, যার স্কোর ১১৮। তৃতীয় স্থানে ইরানের তেহরান, চতুর্থ স্থানে পাকিস্তানের লাহোর এবং পঞ্চম স্থানে চীনের উহান।
আইকিউএয়ারের সূচক অনুযায়ী, বায়ুর গুণমান স্কোর ০-৫০ হলে তা ভালো হিসেবে ধরা হয়। স্কোর ৫১-১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয়, ১০১-১৫০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং ১৫১-২০০ হলে সাধারণ জনগণের জন্যও অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১-৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ বা তার বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ পর্যায়ে পড়ে।
ঢাকার ২৩৬ স্কোর অনুযায়ী, শহরের বায়ু খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। এ ধরনের বাতাস দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু যানবাহনের ধোঁয়া নয়, শিল্প কারখানার নির্গমন, নির্মাণ প্রকল্প থেকে ধুলাবালি, এবং আবহাওয়ার ধরণ ঢাকার বায়ুদূষণ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ। শীত মৌসুমে বাতাসের গতি কম থাকায় দূষিত কণাগুলো বাতাসে স্থায়ী হয়, যা দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
দূষণ কমাতে যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, নির্মাণ কার্যক্রমে কঠোর নিয়মাবলী প্রয়োগ, এবং শিল্প কারখানাগুলোর জন্য উন্নত বায়ু পরিশোধক ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজন। পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে, যেন তারা দূষণ রোধে ভূমিকা রাখতে পারেন।
বায়ুদূষণ একদিনে সমাধানযোগ্য নয়। তবে নিয়মিত নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ঢাকার মতো শহরগুলোতে এখনই প্রয়োজন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ।


