চার দিনের সরকারি সফরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সফরকালে তিনি চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন অধ্যাপক ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, এই সফর ২৬ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত চলবে। প্রধান উপদেষ্টা ২৭ মার্চ হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠিতব্য বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (BFA) সম্মেলনে অংশ নেবেন। এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই ফোরামের উদ্বোধনী প্লেনারি সেশনে তিনি বক্তব্য রাখবেন। এ ফোরামে বৈশ্বিক অর্থনীতি, টেকসই উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
এই সফরের অংশ হিসেবে চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রিমিয়ার দিং ঝুঝিয়াংয়ের সঙ্গে তার একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য সহযোগিতা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে। ২৮ মার্চ অধ্যাপক ইউনূস বেইজিংয়ে ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুসংহত করার বিষয়ে আলোচনা হবে। এই সফরে ছয় থেকে আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অবকাঠামো প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা হুয়াওয়ে কোম্পানির উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি চীনের প্রযুক্তি খাতে সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হবেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-চীন প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করবেন। সফরের শেষ দিন ২৯ মার্চ তিনি চীনের বিখ্যাত পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ করবেন এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা। চীন এই সফরে বাংলাদেশকে এক থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে। এর মধ্যে মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সফর শেষে ২৯ মার্চ চীনের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে অধ্যাপক ইউনূসের।