রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ঘুস হিসেবে গ্রহণের অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি শুধু আলোচিতই নয়, এটি রাজনীতির অঙ্গনে একটি বড় ধরনের নাড়া দিয়েছে। মামলায় টিউলিপ ছাড়াও জড়িত রয়েছেন রাজউকের দুই সাবেক আইন উপদেষ্টা, যারা অভিযোগ অনুযায়ী এই ফ্ল্যাট দখলে টিউলিপকে সহায়তা করেছেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, কোনো অর্থ প্রদান না করেই ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের গুলশান-২ এর একটি ফ্ল্যাট নিজের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। এ বিষয়ে দুর্নীতির সুস্পষ্ট আলামত পাওয়ার পরই দুদক তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
দুদকের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত দল বিষয়টি অনুসন্ধান করে। টিমের সদস্যরা বিভিন্ন নথিপত্র, রেজিস্ট্রি দলিল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এরপর মঙ্গলবার মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ের করা হয়।
এফআইআরে বলা হয়েছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও অসদাচরণের মাধ্যমে ওই ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করান। অভিযোগে আরও বলা হয়, এই ঘটনার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার হয়েছে, যা সরাসরি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায় পড়ে।
এই মামলার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই বিষয়টিকে আইনের শাসনের প্রমাণ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিক এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত আরও সম্প্রসারিত হবে এবং তাদের সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখা হবে। এই মামলাটি শুধু একটি ফ্ল্যাট গ্রহণের ঘটনায় সীমাবদ্ধ না থেকে বৃহৎ পরিসরে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিকের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তার আইনজীবীরা শিগগিরই আদালতে জবাব দেবে বলে জানা গেছে।