ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে এবার প্রায় ১৫ হাজার পুলিশ সদস্য মাঠে থাকবেন। বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বিপণিবিতান, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও রেলস্টেশনে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আজ শনিবার (২৯ মার্চ) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের ছুটি শুরু হলেও, স্বাধীনতা দিবস ও শবে কদরের ছুটির কারণে আগেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন অনেক মানুষ। এর ফলে শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ কমে গেছে, ফাঁকা হতে শুরু করেছে অনেক এলাকা। তবে এই ফাঁকা রাজধানীতে অপরাধের ঝুঁকি এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
ডিএমপি জানায়, ঈদকে কেন্দ্র করে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে বাড়তি টহল জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে গভীর রাতে অপরাধ ঠেকাতে ৬৬৭টি টহল টিম কাজ করবে, যা প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। পাশাপাশি বিপণিবিতান, আবাসিক এলাকা ও জনসমাগমস্থলে সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি থাকবে।
পুলিশের পাশাপাশি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ নিরাপত্তা কাজে যুক্ত হয়েছে। বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটে যাত্রীদের নিরাপত্তায় বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে, যারা যাত্রীদের সহযোগিতা ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করবে। অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির অপতৎপরতা রোধেও বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলেই সহায়তা মিলবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই ঢাকাবাসী নিশ্চিন্তে ঈদ উদযাপন করুক। রাজধানীতে যেন কোনো ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়, সেজন্য আমাদের বাহিনী তৎপর থাকবে।’
এদিকে, ২৭ মার্চ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি জানান, টানা ছুটি থাকলেও নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা ছুটিতে নেই। বরং তারা ঈদের সময়ে আরও বেশি সক্রিয় থাকবেন, যাতে রাজধানীতে কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে।’
সব মিলিয়ে, দীর্ঘ ছুটিতে রাজধানী ফাঁকা হলেও পুলিশের বাড়তি তৎপরতায় ঢাকাবাসী নিরাপদে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।