ই-কমার্স খাতের আলোচিত প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিসবাহ উর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। বিচারক রায়ে বলেন, অভিযুক্তরা ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা ফৌজদারি অপরাধের আওতাভুক্ত।
মামলার বাদী মো. রাজিব নামের এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ইভ্যালির মাধ্যমে পণ্য অর্ডার করে নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না পাওয়ায় তিনি বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। তিনি আদালতে জানান, রাসেল ও শামীমা তার কাছ থেকে ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে প্রতারিত ক্রেতাদের মধ্যে ন্যায়ের এক আশার আলো দেখা দিয়েছে। রাসেল ও শামীমা সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং প্রতারণার মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়েছেন।”
মামলার দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা শেষে আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত মনে করেন। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে তুলে ধরে, কীভাবে ইভ্যালি গ্রাহকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে পণ্য বিক্রির নামে অর্থ সংগ্রহ করে, কিন্তু অধিকাংশ সময় সেই পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয়নি।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী রাজিব বলেন, “আমি বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম বিচার পাওয়ার জন্য। আজ অন্তত প্রমাণ হলো যে, সাধারণ মানুষের কণ্ঠ আদালতে মূল্য পায়।”
উল্লেখ্য, ইভ্যালি ২০২০-২১ সালের দিকে বিভিন্ন অফার ও ছাড়ের মাধ্যমে দেশজুড়ে আলোচনায় আসে। তবে পরে জানা যায়, তাদের ব্যবসার পেছনে রয়েছে বড় অঙ্কের দেনা ও প্রতারণার অভিযোগ। এর পরপরই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়।
এই রায় দেশের ই-কমার্স খাতে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।